ইমেজ SEO কী এবং কিভাবে করা হয়?

ON-Page SEO-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ইমেজ এসইও। ওয়েবসাইটের কনটেন্টে ছবি যোগ করলে ব্যবহারকারীরা কনটেন্ট ভালোভাবে বুঝতে পারে। তাই ইমেজ ব্যবহার এবং এর SEO করা জরুরি। এটি User Experience বৃদ্ধির পাশাপাশি ওয়েবসাইট র‍্যাঙ্ক করতেও সাহায্য করে।

ইমেজ SEO কী?

Image SEO হলো ওয়েবসাইটের ইমেজগুলিকে সঠিকভাবে অপ্টিমাইজ করার প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই ছবির বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝতে পারে এবং এটি দ্রুত র‍্যাঙ্ক হতে সাহায্য করে।

ইমেজ এসইও-তে ইমেজ টাইপ, সাইজ এবং লোড টাইম এবং ইমেজ ফাইলের নাম অল্ট টেক্সট এবং কীওয়ার্ডের অপ্টিমাইজেশনের করতে হয়।

ইমেজ SEO কেন গুরুত্বপূর্ণ?

সঠিকভাবে ইমেজ SEO ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ:

  • ছবিটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই বুঝতে পারে এবং সহজেই সার্চ রেজাল্টে দেখানোর জন্য উপযুক্ত হয়।
  • ওয়েবসাইট দ্রুত লোড হতে সাহায্য করে, যা ব্যবহারকারী এবং র‍্যাঙ্কিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • এটি ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করে, ফলে বেশি সময় ধরে তারা ওয়েবসাইটে অবস্থান করে।
  • সহজেই গুগলের ইমেজ সার্চ থেকে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসে।
  • ইমেজের Size, Formate, এবং Regulation সঠিক থাকলে ব্যবহারকারীদের জন্য কনটেন্টের বিষয় বুঝতে সহজ হয়, যা ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধি করে।
  • সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কিভাবে ইমেজ SEO করবেন?

Image SEO-এর প্রথম কাজ হলো ওয়েবসাইটের কনটেন্ট অনুযায়ী সঠিক ইমেজ নির্বাচন করা। এরপর সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজ করা। এর ধাপগুলো বর্ণনা করা হলো:

রিলেটেড আর্টিকেলঃ

ইমেজ ফাইল ফরম্যাট নির্বাচন

ওয়েবসাইটের কনটেন্টে ইমেজ ব্যবহারের পূর্বে এর বিভিন্ন ফরম্যাট সম্পর্কে জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী ইমেজ আপলোড করতে হবে, তবেই সঠিক ইমেজ SEO সম্পন্ন হবে।

Image Seo Technich

JPEG

  • সব ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ
  • Lossy compression ব্যবহারে Data Lose হয়
  • ডিজিটাল ছবির জন্য আদর্শ নয়

স্ক্রিনশট, ব্লগ পোস্টের ছবি এবং সাইটের গতির জন্য প্রয়োজনীয় কন্টেন্টের ক্ষেত্রে JPEG ভালো।

PNG

  • ক্ষতিকারক কম্প্রেশন ব্যবহার করে না
  • ডেটার মান ঠিক থাকে, তবে ফাইলের Size বড় হয়
  • Page loading speed কমতে পারে

ছবির গুণগত মান বেশি লাগবে এবং সাইটের লোড স্পিড একটু কম হলেও চলবে, এমনটা চাইলে PNG ফরম্যাটটি উপযুক্ত মাধ্যম।

SVG

  • ভেক্টর-ভিত্তিক ফরম্যাট, লোগো ও ডায়াগ্রামের জন্য উপযুক্ত
  • Webpage এর জন্য উপযুক্ত নয়

আইকন এবং লোগোর ক্ষেত্রে, SVG ফরম্যাটটি উপযুক্ত মাধ্যম।

WebP

  • মান বজায় রেখে ফাইলের আকার ছোট করে
  • JPEG-এর তুলনায় ২৫-৩৪% এবং PNG-এর তুলনায় ২৬% ছোট
  • কিছু ব্রাউজারে এখনও সমর্থিত নয়

বর্তমান সময়ে WebP ফরম্যাটটি ওয়েবসাইটের জন্য উপযুক্ত এবং আদর্শ মাধ্যম।

GIF

  • এটি ওয়েবসাইটে দেখতে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হলেও ওয়েবসাইটের গতি একদম কমিয়ে দেয়

ইমেজের আকার নির্বাচন

ইমেজের আকার বলতে বুঝানো হয়েছে ছবির পিক্সেল সাইজ (width and height)। ছবির পিক্সেল সাইজ বেশি হলে ওয়েবসাইটের লোড স্পিড কমে যায়।

পিক্সেল সাইজ নির্ভর করে কন্টেন্টে কোন ধরনের ছবি ব্যবহার করা উত্তম এবং সাইটের ডিসপ্লের সাইজের উপর। তবে এর আদর্শ সাইজ হলো ৭২ PPI (pixels per inch)

ফাইল সাইজ অপ্টিমাইজ

ফাইল সাইজ বলতে ছবির স্টোরেজ স্পেস বুঝানো হয়েছে (Kilobyte, Megabyte etc)। ছবির ফাইল সাইজ যত বাড়বে সাইটের লোড স্পিড তত কমবে।

১ MB-এর চেয়ে বড় ছবি ওয়েবপেজের লোডিং টাইম কমিয়ে দিতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ছবি ২ MBএর কম হওয়া উচিত, এবং আদর্শভাবে ৫০০ KB এর কম হওয়া উচিত। তবে ছবির ফরমেট হিসেবে সাইজের পার্থক্য রয়েছে।

  • JPEG: ১০০ থেকে ২০০ কেবি
  • PNG: ২০০ থেকে ৫০০ কেবি
  • GIF: ৫০০ থেকে ৮০০ কেবি
  • WebP: ৫০ থেকে ১০০ কেবি

বর্ণনামূলক অল্ট টেক্সট (Alt Text)-এর ব্যবহার

Alt Text (Alt Attribute এবং Alt Description নামেও পরিচিত)-এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনের বট সহজেই ইমেজের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুজতে পারে। কারন সার্চ ইঞ্জিনের বট ছবি বুজতে পারে না, ছবির পিছনের Alt Text এর মাধ্যমে সে ছবিটি কোন বিষয়ে নিশ্চিত হয়।\

Alt Text

এটি SERP এবং Google চিত্রগুলিতে তাদের প্রাসঙ্গিকতা বাড়াতে পারে। এটি স্ক্রিন রিডারদের দ্বারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যবহারকারীদের কাছে ছবি বর্ণনা করার জন্যও ব্যবহৃত হয়।

টাইটেল ও ক্যাপশন

ওয়েবসাইটের UX (ইউজার এক্সপেরিয়েন্স) বাড়াতে টাইটেল ও ক্যাপশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কন্টেন্ট পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে ফলে দীর্ঘ সময় ওয়েবসাইটে অবস্থান করে যা র‍্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে থাকে।

সুন্দর টাইটেল ও ক্যাপশন লেখার কিছু টিপসঃ

  • ক্যাপশনগুলো সংক্ষিপ্ত, স্পষ্ট এবং মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে থাকতে হবে
  • এমন ক্যাপশন ব্যবহার করতে হবে যাতে ব্যবহারকারী গভীরভাবে ধারণা পায়
  • কন্টেন্টের প্রাসঙ্গিকতা এবং র‍্যাঙ্কিং বাড়াতে উপযুক্ত কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে

বিষয়বস্তু অনুসারে ছবির নাম

বিষয়বস্তু অনুসারে ছবির সঠিক নাম সার্চ ইঞ্জিনগুলিকে ব্যবহারকারীর অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বিষয়বস্তু এবং প্রাসঙ্গিকতা বুঝতে সাহায্য করে।

  • ওয়েবসাইট বা কোন সফটওয়্যার থেকে ডাউনলোড করা ছবিটি তার প্রাসঙ্গিক নামে Save করতে হবে
  • এক্ষেত্রে এখানে উপযুক্ত কীওয়ার্ডটি ব্যবহার করা যেতে পারে
  • Long-Tail Keyword এর ক্ষেত্রে প্রতিটা Word এর মাঝে হাইফেন (-) ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিনের বুজতে সুবিধা হয়

সাইটম্যাপ তৈরি

সাইট ম্যাপ হচ্ছে একটি XML ফাইল যেখানে সাইটের ইমেজগুলোর তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। এটি সার্চ ইঞ্জিনগুলিকে ইমেজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সাহায্য করে, যাতে সেগুলো সহজে ইনডেক্স করা যায় এবং সার্চ রেজাল্টে দেখানো যায়।

সাইট ম্যাপ তৈরির গুরুত্বঃ

  • ইনডেক্সিং এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ইমেজগুলো খুঁজে পায়
  • ইমেজ সার্চ থেকে সহজেই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনা যায়
  • র‍্যাঙ্কিং-এ সাহায্য করে

স্ট্রাকচার্ড ডেটা যোগ করা

স্ট্রাকচার্ড ডেটা যোগ করা হলো ইমেজ সম্পর্কিত অতিরিক্ত তথ্য সার্চ ইঞ্জিনের কাছে সরাসরি পাঠানো। এটি স্ট্রাকচার্ড ডেটা মার্কআপ ব্যবহার করে হয়ে থাকে (যেমন Schema.org)।

এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন ইমেজের প্রাসঙ্গিক বিষয়বস্তু ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং সার্চ রেজাল্টে সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে পারে।

Schema.org মার্কআপ ব্যবহার করে একটি প্রোডাক্ট ইমেজের স্ট্রাকচার্ড ডেটা যেরকম হয়:

Schema

ইমেজ স্ট্রাকচার্ড ডেটার সুবিধা:

  • ইমেজের প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধির ফলে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই ছবির বিষয়বস্তু বুজতে পারে
  • ইমেজগুলো আকর্ষণীয়ভাবে প্রদর্শিত হয়, যা ওয়েবসাইটের ক্লিক থ্রু রেট (CTR) বাড়ায়
  • র‍্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে

CDN ব্যবহার

CDN (কন্টেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক) হল বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সার্ভারের একটি নেটওয়ার্ক।

এর সুবিধাগুলো হলোঃ

  • এটি পেইজ স্পিড বাড়িয়ে এবং ডাউনলোডের সময় কমিয়ে Better UX তৈরি করতে পারে
  • সার্ভারের হোস্টিং খরচ কমাতে পারে
  • DDoS (Distributed Denial of Service) এবং অন্যান্য আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে

নিজস্ব বা কপিরাইট মুক্ত ইমেজ ব্যবহার

সবসময় যতটা সম্ভব নিজের তোলা বা কপিরাইট নেই (ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করলে) এমন ছবি ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে হবে। এতে কন্টেন্টটি ইউনিক হয়ে উঠবে যা ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করবে।

এছাড়া Google-কে ভালো E-E-A-T (Experience, Expertise, Authoritativeness, and Trustworthiness) সংকেত পাঠাতে এবং র‍্যাঙ্কিং-এ সাহায্য করবে।

ইমেজ অপ্টিমাইজার প্লাগইন ব্যবহার

ইমেজের আকার কমিয়ে সার্ভারের লোড কম করে এবং ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড বাড়ায় যা এসইও-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

জনপ্রিয় কয়েকটি ইমেজ অপ্টিমাইজার প্লাগইনঃ

FAQ

প্রশ্ন ১: ইমেজ SEO কী?

ইমেজকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজ করার প্রক্রিয়াই হলো ইমেজ SEO, যাতে সেগুলো সহজে ইনডেক্স হয় এবং সার্চ রেজাল্টে প্রথম পেইজে প্রদর্শিত হয়।

প্রশ্ন ২: ইমেজের Alt Text কেন গুরুত্বপূর্ণ?

Alt Text সার্চ ইঞ্জিনকে ইমেজের বিষয়বস্তু বুঝাতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন ৩: ইমেজ ফাইল সাইজ কীভাবে কমানো যায়?

ইমেজ অপ্টিমাইজ করার জন্য TinyPNG, Smush, বা ShortPixel এর মতো টুল ব্যবহার করা যায়। ফাইল সাইজ কমানোর সময় ইমেজের গুণগত মান যাতে ঠিক থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রশ্ন ৪: ইমেজের ফাইল নাম কীভাবে এসইও-র জন্য প্রস্তুত করা হয়?

ইমেজ ফাইলের নাম সংক্ষিপ্ত এবং প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড দিয়ে তৈরি করা উচিত।

প্রশ্ন ৫: ইমেজ সাইটম্যাপ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

ইমেজ সাইটম্যাপ সার্চ ইঞ্জিনকে ইমেজগুলোর সঠিক তথ্য দিতে সাহায্য করে। এটি ইমেজগুলো সহজে ইনডেক্স করতে এবং সার্চ রেজাল্টে দেখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top