সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে অন-পেজ এসইও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে যা ওয়েবসাইটের ভেতরের অপটিমাইজেশন এর কাজ করে থাকে।
কিওয়ার্ড রিসার্চ, কন্টেন্টের টাইটেল, মেটা ট্যাগ এবং মেটা ডিসক্রিপশন, হেডিং, ইউজার ফ্রেন্ডলি স্ট্রাকচার, E-E-A-T (Experience, Expertise, Authoritativeness, and Trustworthiness) ইত্যাদি বিভিন্ন ধাপের মাধ্যমে অন-পেজ এসইও করা হয়।
এসব বিষয় সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত জানবো।
অন-পেজ এসইও কি?
অন-পেজ এসইও (On-Page SEO) হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের একটি কৌশল যা ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজের কন্টেন্ট এবং HTML উপাদানগুলিকে অপটিমাইজ করার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনের র্যাংকিং উন্নত করতে সাহায্য করে।
এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট এবং গঠনকে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের জন্য আরও কার্যকর করা হয়।

অন-পেজ এসইওর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
অন-পেজ এসইও করার ক্ষেত্রে Google বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের নিজস্ব কিছু এলগরিদম বা নিয়মকানুন রয়েছে যেগুলো মেনে SEO করলে সার্চ ইঞ্জিনে দ্রুত র্যাঙ্ক করা যায় এবং অর্গানিকভাবে প্রচুর পরিমানে ট্রাফিক পাওয়া যায়।
কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন
- মানসম্মত ও ইউনিক কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে যাতে ব্যবহারকারী কন্টেন্টে পর্যাপ্ত তথ্য পায়।
- কন্টেন্টে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড যুক্ত করতে হবে যাতে টাইটেলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
- ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্যপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট হতে হবে।
টাইটেল ট্যাগ
- ওয়েবপেজের HTML কোডের
ট্যাগে ফোকাস কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। - টাইটেল আকর্ষণীয় , সংক্ষিপ্ত এবং বর্ণনামূলক হতে হবে।
- ভালো ফলাফল পেতে টাইটেল অবশ্যই ৫০-৬০ ক্যারেক্টারের মধ্যে রাখতে হবে।
মেটা ডেসক্রিপশন
- ওয়েবপেজের কন্টেন্টের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা করতে হবে।
- মেটা টাইটেল এবং ফোকাস কীওয়ার্ডের সাথে মিল থাকতে হবে।
- ফোকাস কীওয়ার্ড ব্যবহার করে ১৫০-১৬০ ক্যারেক্টারের মধ্যে মেটা ডেসক্রিপশন হতে হবে।
URL অপটিমাইজেশন
- সংক্ষিপ্ত এবং সহজবোধ্য URL হতে হবে যাতে ব্যবহারকারী সহজেই বুঝতে পারে।
- ইউআরএল অবশ্যই ফোকাস কীওয়ার্ডের সাথে মিল থাকতে হবে।
হেডিং ট্যাগ
- H1 ট্যাগে প্রধান কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
- H1 থেকে H6 পর্যন্ত হেডিং ট্যাগ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
- কন্টেন্টের টাইটেল H1 হবে এবং বাকি সব মূল পয়েন্ট H2, H3,…. নিয়ম অনুযায়ী হবে।
ইমেজ অপটিমাইজেশন
- ইমেজের ফাইল নাম এবং অ্যাল্ট টেক্সটে ফোকাস কীওয়ার্ড সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
- ইমেজ ফাইলের সাইজ এবং আকার কমাতে হবে যাতে লোডিং স্পিড বাড়তে পারে।
ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল লিঙ্কিং
- ওয়েবপেজের অন্যান্য কন্টেন্টের সাথে Internal Linking করতে হবে।
- বিশ্বাসযোগ্য ও মানসম্পন্ন ওয়েবসাইটে External Link প্রদান করতে হবে।
মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন
- ওয়েবপেজ যেন মোবাইল ডিভাইসে সহজে দেখা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে কারন প্রায় ৭০% মানুষ মোবাইলের মাধ্যমে ওয়েবসাইট ভিজিট করে।
স্কিমা মার্কআপ
- সার্চ ইঞ্জিনকে ওয়েবপেজের কন্টেন্ট সম্পর্কে ভালোভাবে বোঝানোর জন্য স্ট্রাকচারড ডেটা যোগ করতে হবে।
- CTR (ক্লিক থ্রো রেট) বাড়াতে স্কিমা মার্কআপ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
অন-পেজ এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ?
অন-পেজ এসইও হলো ওয়েবসাইটের জন্য এমন একটি কৌশল যা গুগলকে কন্টেন্ট বুঝতে সাহায্য করে। এটি এমনভাবে ইঙ্গিত দেয় যেন গুগল ওয়েবপেজের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সঠিকভাবে বুঝতে পারে। এর মূল উপাদান হলো কীওয়ার্ড।
তবে, অন-পেজ এসইও শুধুমাত্র কীওয়ার্ড নির্বাচন করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আসলে ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়ার মতো।
একটি সঠিকভাবে অপটিমাইজ করা পেজ নিশ্চিত করে যে ব্যবহারকারী সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য কোন ঝামেলা ছাড়াই পেয়ে যায়।
বর্তমানে কন্টেন্ট র্যাংক করানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে:
- ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাঃ ওয়েবসাইট ভিজিট করে যাতে ব্যবহারকারী সন্তুষ্ট থাকে।
- বাউন্স রেটঃ ব্যবহারকারী যাতে বেশি সময় ধরে ওয়েবসাইটে অবস্থান করে।
- সার্চ ইন্টেন্টঃ ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট এর সাথে মিল আছে এমন কোন বিষয় সম্পর্কে ব্যবহারকারী Google-এ সার্চ করে সে বিষয় খুঁজে কীওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে।
- পেজ লোডিং স্পিড বাড়াতে হবে।
- ক্লিক-থ্রু রেট বাড়াতে হবে।
- ওয়েবসাইটটি ডেস্কটপ এবং মোবাইল ডিভাইসের জন্য অপটিমাইজেশন করতে হবে।
কীভাবে অন-পেজ এসইও করবো?
গত কয়েক বছরে অন-পেজ SEO-তে অনেক পরিবর্তিত এসেছে। পূর্বে পেজ অপ্টিমাইজ করতে মাত্র কয়েকটি সাধারণ কাজ করলেই হতো।
উদাহরণস্বরূপ, কীওয়ার্ড ডেনসিটি, সার্চ ভলিউম বা কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকলেই অন-পেজ SEO কার্যকর করা যেত।
কিন্তু এখন অন-পেজ SEO অনেক বেশি উন্নত এবং ডিটেইলস বিষয় হয়ে উঠেছে।
- কিওয়ার্ড রিসার্চ
- মেটা টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন
- হেডিং ট্যাগ
- ইউজার এক্সপেরিয়েন্স
- ইন্টারনাল লিঙ্কিং
- মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন
- ইমেজ অপটিমাইজেশন
- পেজ লোড স্পিড
- বাউন্স রেট বা CTR
- URL অপ্টিমাইজেশন
পরবর্তী অধ্যায়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।