SEO [Search Engine Optimization]

অন-পেজ এসইও করার কৌশল পর্ব-৩

আসসালামুআলাইকুম। গত পর্বে আমরা অন-পেজ এসইও করার কৌশল পর্ব-২ এ অন-পেজ এসইও এর মধ্যে কীভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ, মেটা টাইটেল এবং মেটা ডেসক্রিপশন লিখবো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছি।

এই পর্বে আমরা কন্টেন্ট কীভাবে লিখতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

কন্টেন্ট কী?

কন্টেন্ট এমন একটি বিষয় যেখানে কোন তথ্য বা উপাদান লেখা বা ছবি বা ভিডিও-এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় যা এর পাঠকের জন্য উপকারি এবং মূল্যবান। এটি হতে পারে ব্লগ পোস্ট, ভিডিও টিউটোরিয়াল, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট,  ইবুক বা আর্টিকেল

Capturing the creative process: Brainstorming, writing, and refining content ideas.

কন্টেন্ট বিভিন্ন উদ্দেশ্যে লেখা বা তৈরি হতে পারে, যেমনঃ

  • তথ্য প্রদান: পাঠক বা দর্শকের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ।
  • বিনোদন: দর্শক বা শ্রোতাদের মনোরঞ্জন।
  • শিক্ষা: নতুন কিছু শেখানো বা দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য।
  • বিজ্ঞাপন: পণ্য বা সেবা প্রচারের জন্য।
  • ব্র্যান্ড প্রচার: ব্যবসার ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি এবং প্রচার।

কন্টেন্ট রাইটিং এর গুরুত্ব

অন-পেজ এসইওর ক্ষেত্রে কন্টেন্ট রাইটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক এবং অরগানিক ট্রাফিক পেতে কিওয়ার্ড যতটা না গুরুত্ব পালন করে তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক ও মানসম্মত কন্টেন্ট।

এটি সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীর উভয়ের কাছেই ওয়েবসাইটকে আকর্ষণীয় এবং ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। অন-পেজ এসইও তে কন্টেন্টের গুরুত্ব আলোচনা করা হলোঃ

কীওয়ার্ড অপ্টিমাইজেশন

অন-পেজ এসইওতে কিওয়ার্ড ব্যবহারের মূল মাধ্যম হলো কন্টেন্ট রাইটিং। সঠিক কীওয়ার্ড নির্বাচন এবং তা প্রাসঙ্গিকভাবে কন্টেন্টে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।

এটি গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে ওয়েবপেজের বিষয়বস্তু বুঝতে এবং র‍্যাঙ্কিং বাড়াতে সাহায্য করে।

ইউনিক এবং মানসম্পন্ন কন্টেন্ট

সার্চ ইঞ্জিন ইউনিক, ব্যবহারকারীর জন্য উপযোগী এবং মূল্যবান কন্টেন্টকে বেশি গুরুত্ব দেয়। নিম্নমানের কন্টেন্ট র‍্যাঙ্কিং-এর ক্ষেত্রে এবং অরগানিক ট্রাফিক পেতে বাধা দেয়। 

ইউনিক ও গুণগত মানসম্পন্ন কন্টেন্ট ব্যবহারকারীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং তাদের ওয়েবসাইটে দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা Bounce Rate কমায় এবং User Engagement বাড়ায়।

টাইটেল এবং মেটা ডিসক্রিপশন

টাইটেল

কন্টেন্ট লেখার ক্ষেত্রে সঠিক টাইটেল লেখা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারন, এটি ব্যবহারকারীর জন্য প্রথম ইন্টেনশন তৈরি করে ওয়েবসাইটে প্রবেশের জন্য ফলে CTR (ক্লিক থ্রো রেট) বৃদ্ধি পায় যা র‍্যাঙ্কং-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

টাইটেল হতে হবে ৫০ থেকে ৬০ শব্দের মধ্যে এবং ফোকাস কিওয়ার্ড অবশ্যই সেখানে থাকতে হবে।

মেটা ডিসক্রিপশন

টাইটেলের নিচে যা লেখা থাকে সেটিই হলো মেটা ডেসক্রিপশন। এটি সম্পূর্ণ কন্টেন্টের সারমর্ম হিসেবে কাজ করে। এটি র‍্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে এবং ব্যবহারকারীর কন্টেন্টি পড়ার হার বাড়িয়ে দেয়।

এটি অবশ্যই ১৫০ থেকে ১৬০ শব্দের মধ্যে হতে হবে এবং ফোকাস কিওয়ার্ড অবশ্যই সেখানে থাকতে হবে।

হেডিং এবং সাবহেডিং (H1, H2, H3)

কন্টেন্ট লেখার সময় হেডিং এবং সাবহেডিং এর ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কারন গুগল যখন ইনডেক্স করবে তখন কন্টেন্টের বিষয়বস্তু গুগলের জন্য বুঝতে সুবিধা হবে ফলে ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্ক বৃদ্ধি পাবে।

ইমেজ এবং অল্ট টেক্সট

কন্টেন্টে ইমেজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এর সঠিক অল্ট টেক্সট ব্যবহার করা জরুরী। গুগল যেহেতু ইমেজ বুঝতে পারে না তাই এটি ইমেজের বিষয়বস্তু বুঝতে সাহায্য করে করে গুগলের ইনডেক্স করতে সুবিধা হয়।

ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল লিঙ্কিং

এক্সটারনাল এবং ইন্টারনাল লিঙ্কিং ওয়েবসাইটের ভিজিবিলিটি, ব্র্যান্ড ভেলু এবং সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং বাড়াতে সাহায্য করে। 

ইন্টারনাল লিঙ্কিং

  • ব্যবহারকারীকে সহজেই একটি পেজ থেকে অন্য পেজে যেতে পারে সাহায্য করে।
  • পেজ অথরিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • সার্চ ইঞ্জিনের বটকে সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট ক্লল করতে সাহায্য করে।

এক্সটারনাল লিঙ্কিং

  • ওয়েবসাইটের ব্র্যান্ড ভেলু এবং ট্রাস্ট ভেলু বৃদ্ধি করে।
  • কন্টেন্টের প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধি করে।
  • ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করে।
  • র‍্যাঙ্কিং-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

রিডেবিলিটি

রিডেবিলিটি বলতে এমন কন্টেন্ট বোঝানো হয় যা সহজে পড়া, বোঝা এবং ব্যবহারকারীর জন্য উপভোগ যোগ্য। এটি এমনভাবে লেখা হয় যাতে ব্যবহারকারী কম সময়ে কন্টেন্টের মূল তথ্য বুঝতে পারে।

এটি ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমায় এবং র‍্যাঙ্কিং-এ সাহায্য করে।

CTR বৃদ্ধি

CTR (ক্লিক থ্রো রেট) বৃদ্ধি মানে হলো কন্টেন্ট বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছানো এবং তাদের আকর্ষণ করা। এটি সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজ (SERP) থেকে ওয়েবসাইটে ক্লিক করার হার বাড়ায় এবং র‍্যাঙ্কিং এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কন্টেন্ট রাইটিং এর ধাপ

কন্টেন্ট লেখার সময় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মেনে চলতে হবে।

Visualizing the project management process: Brainstorm, Research, Plan, Prepare, Share. Achieve your goals with this structured approach.

বিষয় নির্বাচন

  • কোন বিষয়ে কন্টেন্ট লেখা হবে সেই বিষয় নির্ধারণ করতে হবে।
  • ব্যবহারকারী কোন বিষয়ে লেখা পড়তে আগ্রহী তা বুঝে কন্টেন্ট লিখতে হবে।
  • কন্টেন্টের বিষয়বস্তু অবশ্যই ওয়েবসাইট সম্পর্কিত হতে হবে।

রিসার্চ

  • যে বিষয়ে কন্টেন্ট লেখা হবে সে বিষয়ে ভালো ভাবে গবেষণা করতে হবে।
  • ওয়েবসাইটের কম্পিটিটরদের খুঁজে বের করে তাদের কন্টেন্ট সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে তাদের থেকে ভালো কন্টেন্ট লেখার জন্য।
  • যে বিষয়ে কন্টেন্ট লেখা হবে সে বিষয়ে নতুন কোন আপডেট থাকলে তা খুঁজে বের করে কন্টেন্টে উল্লেখ করতে হবে।

লেখার কাঠামো তৈরি করা

কীভাবে কন্টেন্ট লেখা হবে তার একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে। অর্থাৎ, কোন বিষয়ের পর কোন বিষয় হবে না নির্ধারণ করতে হবে এবং তা সঠিক হেডিং (H1, H2, H3,….) অনুযায়ী সাজাতে হবে। 

কন্টেন্ট লেখা শুরু করা

বিষয় নির্বাচন, রিসার্চ, লেখার কাঠামো তৈরি করা হয়ে গেলে কন্টেন্ট লেখা শুরু করতে হবে। সঠিক নিয়ম মেনে সহজ ভাষায় ব্যবহারকারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে কন্টেন্ট লিখতে হবে।

প্রুফরিড এবং এডিট করা

সঠিক নিয়ম অনুযায়ী কন্টেন্টটি লেখা হয়ে গেলে তা পুনরায় দেখতে হবে কোথাও কোন বিষয় বা তথ্য বাদ পড়েছে বা ভুল হয়েছে কিনা। কোথাও কোন তথ্য ভুল হলে বা কোন কিছু লেখা বাকি থাকলে তা এডিট করে কন্টেন্টটি সম্পন্ন করতে হবে।

সাধারণ প্রশ্নাবলী

কন্টেন্ট রাইটিং কীভাবে শুরু করবো?

টার্গেট অডিয়েন্স, উদ্দেশ্য নির্ধারণ, এবং বিষয়ভিত্তিক গবেষণা করে একটি আকর্ষণীয় টাইটেল দিয়ে কন্টেন্ট লেখা শুরু করতে হবে।

SEO ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট বলতে কী বোঝায়?

এটি এমন কন্টেন্ট যা সার্চ ইঞ্জিনের অ্যালগরিদম অনুযায়ী অপ্টিমাইজ করা হয় যাতে এটি সহজে র‍্যাঙ্ক করতে পারে এবং ব্যবহারকারীর জন্য উপযোগী হয়ে উঠে।

কন্টেন্টের দৈর্ঘ্য কত হওয়া উচিত?

কন্টেন্টের দৈর্ঘ্য নির্ভর করে এর বিষয়ের উপর। তবে এটি সর্বনিন্ম ৭০০ শব্দের হওয়া উচিৎ।

কন্টেন্ট রাইটিংয়ে AI কি সহায়ক হতে পারে?

হ্যাঁ, তবে কন্টেন্টটিতে পর্যাপ্ত তথ্য থাকতে এবং ব্যবহারকারীর চাহিদা পূরন করে এমন হতে হবে।

কীভাবে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখব?

কন্টেন্টে ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত তথ্য থাকতে হবে এবং সহজ ভাষায় লিখতে হবে।

এই সম্পর্কে আরও পড়ুনঃ

অন-পেজ এসইও করার কৌশল পর্ব-১

এসইও কত প্রকার ও কি কি? সংক্ষেপে জানুন

Learn SEO Beginner Guideline: ধারাবাহিক পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন

Md Sazzad Hossain Remon

Recent Posts

এডভান্সড অন-পেজ এসইও পর্ব-৪

আসসালামুআলাইকুম। অন-পেজ এসইও করার কৌশল পর্ব-৩ এ কীভাবে কন্টেন্ট লিখতে হয় এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে…

12 hours ago

প্রেগন্যান্সি ক্যালকুলেটর প্রজেক্ট: কিভাবে এটি তৈরি করবেন?

কখনো ভেবেছেন, প্রেগন্যান্সি ক্যালকুলেটর তৈরি করা কীভাবে সম্ভব? যদি কখনো আপনার মনেও এই প্রশ্ন চলে…

4 days ago

অন-পেজ এসইও করার কৌশল পর্ব-২

আসসালামুআলাইকুম। গত পর্বে আমারা অন-পেজ এসইও করার কৌশল অর্থাৎ অন-পেজ এসইও পর্ব-১ এ এর গুরুত্বপূর্ণ…

1 week ago

অন-পেজ এসইও করার কৌশল পর্ব-১

সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে অন-পেজ এসইও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে যা ওয়েবসাইটের ভেতরের অপটিমাইজেশন এর…

2 weeks ago

কীভাবে ওয়েবসাইট পিন্টারেস্টে ক্লেইম করবেন?

আপনি জানেন কি, কীভাবে ওয়েবসাইট পিন্টারেস্টে ক্লেইম করবেন? পিন্টারেস্টে ওয়েবসাইট ক্লেম করা খুবই সহজ এবং…

2 weeks ago

এসইও কত প্রকার ও কি কি? সংক্ষেপে জানুন

এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন) হলো ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্ক বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়া। SEO মূলত ৩ প্রকারঃ অন-পেইজ…

2 weeks ago